—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দীর্ঘ তাপপ্রবাহের যেন শেষ দেখতে পাচ্ছেন না মানুষ। সপ্তাহ জুড়ে তাপপ্রবাহের যে সতর্কবার্তা আবহাওয়া দফতর জারি করেছে, তাতে পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানও রয়েছে। সকাল ১০টার পরে রাস্তা প্রায় সুনসান হয়ে যাচ্ছে। বইছে গরম হাওয়া। অটো, টোটো, গাড়িও প্রায় চলছে না। এর মধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় টহল দিতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। বিপদে কৃষকেরাও।
জেলায় ১৩ এবং ২৫ মে ভোট রয়েছে। ইতিমধ্যেই চলে এসেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সোমবার জানা যায়, বর্ধমান থানায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে ওয়াটার কুলার ও সানস্ক্রিন চাওয়া হয়েছে। বাহিনীর বক্তব্য, তাঁদের যে কোনও পরিস্থিতিতেই মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আছে। কিন্তু তীব্র গরমে সুস্থ থেকে পরিষেবা দিতেই তাঁরা এই ন্যূনতম দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ এই বিষয়ে সহযোগিতা করছে বলেও দাবি বাহিনীর।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের কাজে আসা নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য কমিশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য বিশেষ ফান্ডও মিলেছে। হাসপাতাল সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “পর্যাপ্ত ওআরএস মজুত রাখা হয়েছে। বিশেষ বেড ও আইসিইউ-র ব্যবস্থাও থাকছে। পাশাপাশি, ভোটের দিন কেন্দ্রগুলিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও কাজ করবে বলে জানা গিয়েছে। এসডিও (বর্ধমান উত্তর) তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের জন্য গরম মোকাবিলায় জেলা পুলিশ ও প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”
শহরের বাসিন্দারা জানান, রোদে বেরোলেও নানা পোশাকে ভাল
করে গা ঢেকে, নানা সতর্কতা অবলম্বন করে তাঁরা বেরোচ্ছেন। সোমবারও দেখা গেল, বিকেল পর্যন্ত কালনায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম। দীনেশ সাহা নামে এক ভ্যান চালক বলেন, “মালপত্র নিয়ে প্যাডেল ঘোরালেই দরদর করে ঘাম হচ্ছে। বার বার জল খেয়েও দুর্বল হয়ে পড়ছি। সকাল ১০টা পর্যন্ত
কিছু মালপত্র কষ্ট করে নিয়েও যাচ্ছি। তবে তার পরে ভাড়া তেমন পাওয়া যাচ্ছে না।”
এ দিকে গরম যত বাড়ছে, জিনিসপত্রের দামও তত বাড়ছে বলে দাবি করছেন শহরবাসী। ২০-২৫ টাকার ডাব ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরো বাজারগুলিতে চড়তে শুরু করেছে আনাজের দর। অথচ দাম দিলেও ভাল মানের আনাজের যোগান তলানিতে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। চাষিদের দাবি, গরমে প্রভাব পড়ছে ফলনেও। বহু জমিতে শুকিয়ে যাচ্ছে পাট, তিল এবং আনাজ। শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ঝড়ে পড়ছে ছোট ছোট আম, লিচু।
গ্রামীণ এলাকায় চাষাবাদের পাশাপাশি বহু পরিবার বাড়িতে পশু পালন করেও আয় করেন। গরমে পুকুর, নদীর জল শুকিয়ে যাওয়ার তাদের খাবার জল পেতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। কালনা মহকুমা কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, “গত বছর বৃষ্টি কিছুটা কম হওয়া এবং চলতি বছরে টানা শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে গ্রামাঞ্চলে
অনেক জলাশয় জল শূন্য হয়ে গিয়েছে। ফলে কিছু কিছু এলাকায় পশুদের খাবারের জল পেতে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আনাজের জোগানও কমেছে। দ্রুত কালবৈশাখী প্রকোপে কিছুটা বৃষ্টি মিললে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy