অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
‘মাথায় রাখবেন যারা আজকে ভোট কেটে বিজেপির হাত শক্তিশালী করতে চাইছে, সেই সিপিএম-কংগ্রেসের অনৈতিক জোটকে একটি ভোটও দেবেন না’। রবিবার কৃষ্ণনগর লোকসভার কালীগঞ্জের পানিঘাটার মাঠে প্রচারে এভাবেই বাম-কংগ্রেস জোটকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে এমন দাবিও করলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর সরকার যদি তৃতীয়বারের জন্য সরকারে আসে। তাহলে এই ভোট আপনার জীবনের শেষ ভোট। ওরা সংকল্প পত্র প্রকাশ করে বলেছে ‘ওয়ান নেশন ওয়ান ভোট করবো।’ এর অর্থ মানুষ পঞ্চায়েত, পুরসভায় ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে না।’’
এদিন প্রায় চল্লিশ মিনিট বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন তিনি। বলেন, ‘‘২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে এই লোকসভায় আমরা এক লক্ষ কুড়ি হাজার ভোটে এগিয়ে আছি। এই ব্যবধান আরও বাড়াতে হবে।’’
অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূলকে জিতিয়ে বাংলা থেকে বহিরাগতদের বিতাড়িত করুন।’’ এরপরেই বলেন, ‘‘তদন্ত ছাড়া, প্রমাণ ছাড়া এই স্বৈরতান্ত্রিক সরকার মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করেছে। মানুষের রায়কে সম্মান না জানিয়ে মানুষ যাকে নির্বাচিত করেছে তার পদ যারা খারিজ করেছে তাদের ইভিএমের বোতামে জবাব দিন।’’ বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যাকে প্রার্থী করেছে কৃষ্ণনগরের লোক তাকে চেনে না। তাই রাজমাতা বলে পরিচয় দিতে হচ্ছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘অমৃতা রায় ভোট চাইতে গেলে তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করবেন, লক্ষীর ভান্ডার নিয়ে তাদের অবস্থান কী স্পষ্ট করুন। আবার রাজ্যপালের বিষয়ে তাঁদের অবস্থান কী? তিনি মেয়ের বয়সী এক কর্মীর শ্লীলতাহানি করেছেন। তারপর বাংলা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন রাজ্যপাল। জানতে চাইবেন, সন্দেশখালি সম্পর্কে তাঁদের অবস্থান কী? বিজেপি বাংলার মানুষকে কলুষিত, কলঙ্কিত, কালিমালিপ্ত করতে গিয়ে তৃণমূলকে ছোট করেনি। বাংলার মানুষকে ছোট করেছে।’’
সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘মহিলাদের দু’হাজার টাকা দিয়ে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করিয়ে বাংলাকে কলুষিত করা হয়েছে।’’ এর পরেই মঞ্চ থেকে একটি অডিও শোনান তিনি। তাঁর দাবি, অডিওর ওই কণ্ঠস্বর বিজেপির কোচবিহার জেলার সহ-সভাপতি দীপা চক্রবর্তীর। তিনি মঞ্চে পর্দায় সন্দেশখালির ‘স্টিং ভিডিয়ো’ দেখান কর্মী- সমর্থকদের। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করে সরকার ফেলে দেবেন বলছেন। এবং তাঁর কথাতেই সন্দেশখালিতে অস্ত্র রাখা হয়েছিল বলেও সেখানে দেখানো হয় (যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করকেনি আনন্দবাজার)।
অভিষেক দাবি করেন, ‘‘জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ একশো দিনের শ্রমিকের টাকা সরকারি অ্যাকাউন্টে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন প্রায় তেরো লক্ষ মহিলা।’’ জানান, প্রায় তিপ্পান্ন লক্ষ মানুষকে কেন্দ্র সরকারের সাহায্য ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে। ঐকশ্রী প্রকল্প থেকে ২৮ লক্ষ সংখ্যালঘু আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন।
মঞ্চ থেকে অভিষেক দাবি করেন, ‘‘প্রথম দুই দফায় উত্তরবঙ্গের মানুষ বহিরাগত ও বাংলা বিরোধীদের মাথা আর ঘাড় ভেঙে দিয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় মেরুদন্ড ও কোমরটা ভাঙবেন। তার পর পঞ্চম ও ষষ্ঠ দফায় হাঁটু ও পা ভাঙবেন। শেষ দফায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তিনি তাদের বিসর্জন দেবেন।’’ শেষে ফের কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে মহুয়া মৈত্রকে আগের বারের চেয়ে দ্বিগুণ ব্যবধানে জেতানোর আর্জি জানান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy